আমরা
অনেক সময় অনেক
কিছু মনে রাখতে
পারি না, ভুলে
যাই। বিশেষ করে
বাজারে গেলে বা
কোনো কিছু কিনতে
গেলে এমন ঘটনা
প্রায়শই ঘটে থাকে।
কারো ক্ষেত্রে কম,
কারো ক্ষেত্রে বেশি।
সবার মনে রাখার
ক্ষমতা বা স্মরণশক্তি এক
রকম থাকে না।
আমরা গ্রীক বিজ্ঞানীদের কাছ
থেকে এ তথ্য
পাই যে- মানুষের মস্তিষ্কের ১৪
বিলিয়ন স্নায়ুকোষ একে
অপরের সাথে সংযুক্ত হয়ে
একটা ইলেকট্রো কেমিক্যাল চক্র
তৈরি করে, একে
এনগ্রাম বলে। প্রতিটা এনগ্রাম এর
পথই হলো স্মরণশক্তি। জেনেটিক বিজ্ঞানীরা বলেন,
পিতামাতার স্মরণশক্তি বা
মেধাশক্তি বেশি থাকলে
সন্তানরাও সে রকম
হয়। এজন্য স্মরণশক্তির বংশগতির বৈশিষ্ট্যের একক
জিনের ওপর শতকরা
৬০ ভাগ নির্ভরশীল। বাকি
৪০ ভাগ পরিবেশ,
পুষ্টিকর খাদ্য ও
মস্তিষ্কের চর্চার ওপর
নির্ভর করে। গবেষকদের মতে,
কোনো শিশু কম
বুদ্ধি বা কম
স্মরণশক্তিসম্পন্ন
জিন বহন করলেও
ভালো পরিবেশের কল্যাণে ভালো
বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে
পারে।সুতরাং সহায়ক পরিবেশ
পেলে এবং মস্তিষ্কের কিছু
চর্চা করলে স্মরণশক্তি বাড়ানো
সম্ভব। জেনে নিন
স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার
কিছু কৌশল বা
সুত্র।
আয়ুর্বেদিক উপায় :
প্রাচীন আর্য়ুবেদ চিকিত্সায় স্মরণশক্তি বৃদ্ধির বেশ
কিছু উপায় রয়েছে।
যেমন কচি বেলপাতা খাঁটি
ঘিয়ে ভেজে খেলে
স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।
আবার ব্রাহ্মী শাক
এমন একটি ভেষজ
উপাদান, যা স্মরণশক্তি বৃদ্ধির নানা
ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
মস্তিষ্ককে সজীব করার
একটি আয়ুর্বেদিক উপায়
হলো – দশটি কাঠ
বাদাম, দুটি ছোট
সাদা এলাচ, দুটি
শুকনা খেজুর একটি
মাটির পাত্রে আগের
দিন পানিতে ভিজিয়ে
রাখুন। পরের দিন
সকলে বাদামের খোসা
ছাড়িয়ে, এলাচের দানা
বের করে, শুকনো
খেজুরের বিচি বের
করে এক সাথে
৩০ গ্রাম চিনির
সাথে মিহি করে
বেটে নিতে হবে।
এই মিশ্রণ ২৫
গ্রাম মাখনের সাথে
মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে
মস্তিষ্ক সজীব থাকে
এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি
পায়।
ব্যায়াম করুন :
জানেন
কি নিয়মিত ব্যায়াম স্মরণশক্তি বৃদ্ধি
করতে সহায়তা করে?
বিশেষ করে অ্যারোবিকস ব্যায়াম এক্ষেত্রে বেশি
সহায়ক। তালে তালে
নির্দিষ্টভাবে
ব্যায়াম করতে হয়
বলে তা মস্তিষ্কের চর্চারও কারণ
হয়ে দাঁড়ায়। পদ্ধতি
মনে রাখতে মস্তিষ্কে চাপ
প্রয়োগ হয়, ফলে
স্মরণশক্তি স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি
পায়। আবার যোগব্যায়ামও স্মরনশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা
করে। যোগব্যায়ামের কিছু
আসনে মস্তিষ্ক পূর্ণ
বিশ্রাম পায়। ফলে
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি
পায় এবং মনে
রাখার ক্ষমতা বেড়ে
যায়।
পুষ্টিকর খাবার খান :
পুষ্টিকর খাবার
স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
মাতৃগর্ভে থাকার সময়
শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে
বিশেষ কিছু উপাদানের প্রয়োজন হয়।
গর্ভবতী মা যদি
পুষ্টিকর খাবার খান
তাহলে মস্তিষ্ক যথাযথভাবে গঠিত
হয়। আমিষ ও
স্নেহজাতীয় খাবার এ
ব্যাপারে সাহায্য করে।
সয়াবিন, দুধ, যকৃত,
বাদাম, মাখন ইত্যাদিতে রয়েছে
বিশেষ উপাদান কোলিন।
সাইনাপসে তথ্য আদান
-প্রদানের অন্যতম মাধ্যম
হচ্ছে কোলিন। খাবার
থেকে এই উপাদান
পাওয়া যায় বলে
স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে পুষ্টিকর খাবারের যথেষ্ট
অবদান রয়েছে।
মনোযোগ দিন :
কোনো
বিষয় মনোযোগ দিয়ে
শিখলে বিষয়টি মনে
রাখা সহজ হয়।
তাই কোনো পড়া
বা কাজ শেখার
সময় যথেষ্ট পরিমাণে মনোযোগ
দিন। মনোযোগ একটি
মানসিক প্রক্রিয়া। তাই
এর চর্চা করলে
সহজেই স্মরণশক্তি বৃদ্ধি
করা সম্ভব।
মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিন :
মস্তিষ্কে চাপ
প্রয়োগ করে বা
জোর করে মনে
করার চেষ্টা করার
পরও যদি কিছু
মনে না পড়ে
তাহলে মস্তিষ্ককে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন।
অন্য কিছু ভাবুন
বা ওই প্রসঙ্গ থেকে
একেবারেই সরে আসুন।
এতে কিছুক্ষণ পর
প্রয়োজনীয় বিষয়টি নিজে
থেকেই মনে পড়ে
যাবে। কোনো কিছু
স্মরণ করার জন্য
এ পদ্ধতিটি বেশ
কার্যকর।
শুনুন, পড়ুন এবং লিখুন :
কোনো
কিছু শেখার সময়
বিষয়টি অন্যের কাছ
থেকে শুনলে মনে
রাখা সহজ হয়।
এ কারণেই ক্লাসে
শিক্ষকের লেকচার শুনলে
বিষয়টি সহজেই আত্মস্থ করা
যায় এবং মনে
রাখা যায়। তাই
কোনো কিছু পড়ার
সময় জোরে জোরে
কয়েকবার পড়ুন, এতে
মনে রাখা সহজ
হবে। পড়ার পর
তা লিখলে আমাদের
মস্তিষ্ক তার একটি
ছবি তৈরি করে
ফেলে। ফলে বিষয়টি
তুলনামূলক সহজে মনে
পড়ে। তাই কোনো
কিছু পড়ার পর
তা লেখার অভ্যাস
করুন।
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন